ডিজিটাল ডেস্ক, ২৬ মে : রাজ্য সরকারের তৈরি রিভিউ পিটিশনের খসড়ায় সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার বিষয়ে চাকরিহারা শিক্ষকরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সোমবার রাজ্যের শিক্ষাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে তাঁরা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, নতুন করে আর কেউ পরীক্ষায় অংশ নেবেন না (SSC Update)।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার কীভাবে তাঁদের স্থায়ীভাবে চাকরির সুযোগ দিতে পারে, তা নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি দিয়েছে ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’। মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে চাকরিহারা শিক্ষকরা মূলত তিনটি বিষয়ে আলোচনা করার প্রস্তাব দেন—
- সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর রাজ্য যে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে, তাতে কোন কোন বিষয় উল্লেখ রয়েছে।
- সুপ্রিম কোর্ট যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দিয়েছিল, তা বর্তমানে কোন পর্যায়ে রয়েছে।
- যদি পুনর্বিবেচনার আবেদন (রিভিউ পিটিশন) খারিজ হয়ে যায়, তাহলে তাঁদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অন্য কী সম্ভাবনা থাকতে পারে।
এই চিঠি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, তিনি চিঠি পেয়েছেন ঠিকই, তবে শিক্ষকরা কেন নতুন করে আলোচনায় বসতে চাইছেন, সে বিষয়টি সেখানে স্পষ্ট নয়। এরপর চাকরিহারা শিক্ষকরা পুনরায় শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দেন এবং আলোচনার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করেন।
সোমবার দুপুর একটার দিকে বিকাশ ভবনে রাজ্যের শিক্ষাসচিবের সঙ্গে আলোচনা করেন আন্দোলনকারী শিক্ষকদের ছয়জন প্রতিনিধি। তবে আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী অনুপস্থিত থাকায় তাঁরা বেশ অসন্তুষ্ট হন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়ে যে খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে, তা তাঁদের মধ্যে কিছুটা আশার সঞ্চার করেছে।
সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বৃন্দাবন ঘোষ জানান, তাঁরা তাঁদের চাকরি পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তাঁরা নতুন করে নোটিফিকেশন জারি হওয়ার কথা শুনেছেন, এবং সেই বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষাসচিব জানান, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যের রিভিউ পিটিশনের নিষ্পত্তির আগেই কীভাবে নতুন করে নোটিফিকেশন দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য, যোগ্যতার ভিত্তিতে তাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাই নতুন করে পরীক্ষায় বসার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, অনেক শিক্ষক শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন, এমনকি ক্যানসারের রোগীও রয়েছেন, তাই সকলের কথা বিবেচনা করে তাঁরা নতুন পরীক্ষা দিতে পারবেন না এবং নোটিফিকেশন প্রত্যাখ্যান করছেন। বৃন্দাবন ঘোষ আরও জানান, তাঁদের দাবির গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে শিক্ষাসচিব কোনো স্পষ্ট আশ্বাস দেননি।
আরও এক আন্দোলনকারী শিক্ষক, হাবিবুল্লাহ, জানান যে শিক্ষামন্ত্রী উপস্থিত থাকলে আলোচনা আরও ফলপ্রসূ হতে পারত। তিনি বলেন, তাঁরা কোনো স্পষ্ট উত্তর পাননি এবং শিক্ষামন্ত্রী কেন দেখা করেননি, তা বুঝতে পারছেন না। তবে তিনি স্বীকার করেন যে এ দিনের মিটিং কিছুটা ইতিবাচক ছিল। পাশাপাশি, তিনি জানান, এবার চাকরিহারাদের আন্দোলনের অভিমুখ হবে দিল্লির দিকে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কেন এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না, সে সম্পর্কে কোনো পরিষ্কার উত্তর না পাওয়ায়, চাকরিহারারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তাঁরা আবারও ব্রাত্যের সঙ্গে আলোচনার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠাবেন। তাঁরা শিক্ষাসচিবের কাছ থেকে যে সমস্ত প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর পাননি, সেগুলিও আলোচনায় তুলে ধরবেন।