ডিজিটাল ডেস্ক ৮ জুনঃ বঙ্গে ছাব্বিশের মহারন যত এগিয়ে আসবে ততই দেখা যাবে সভার বহর। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নানা রঙের সভা। বড় বড় রাজনৈতিক নেতাদের বিরাট বিরাট সব রাজনৈতিক মঞ্চ। এই রাজনৈতিক মঞ্চের পরিকাঠাম তৈরিতে যারা একদম সামনের সারি উপস্থিত থাকে তারা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তারা আসেও সামনে, লড়াইও করে একদম সামনে থেকে। পরবর্তীতে ভোট হয়ে গেলে প্রানও হারান তারাই। বিধানসভা ভোটের এক বছর আগেই বাংলা থেকে ঘুরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। বিজেপি যে বাংলার মসনদ ক্ষমতা দখলের লড়াই শুরু করে দিয়েছে সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই আবহের মধ্যে এবার সন্দেশখালিতে সভা করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আর সেই সভা ঘিরে আগেই তৈরি করা হয়েছিল কলকাতা বাসন্তী হাইওয়ের ন্যাজাট থানার অন্তর্গত বয়ারমারিতে একটি ওভার গেট করা হইয়েছিল । সেই ওভার গেটর ব্যানার ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি ওভার গেটে লাগানো শুভেন্দু অধিকারীর একাধিক ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়। সেই নিয়ে পরিস্থিতি উতপ্ত হয় খানিকটা। সেই নিয়ে রাজনৈতিক কারবারিরা জলঘোলা কম করতেও ছাড়েনি(Subhendu Adhikari Hinduism)।
সন্দেশখালিতে শুভেন্দু বানী-
এই দিনের সভা থেকে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আরও একবার ‘হিন্দুত্বের বাণী’ ও ‘বাঙালীকতায়’ শাণ দিয়ে গেলেন। তিনি অভিযোগ করেন “জামাই ষষ্ঠীর দিন শাহজাহানের বাহিনী এখানে নৃশংস বাহিনী সুকান্ত মণ্ডলকে খুন করেছে। আমি এই কেসটা গতবছর নিই”। “তখন দেখি মমতার পুলিশ অভিযুক্তদের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেয়।”কলকাতা হাইকোর্টে গিয়ে এই কেসটা রিওপেন করাই। তিনি বলেছেন আগামী সোমবার হাইকোর্ট খুলছে তখন নিশ্চয়ই বিচারের বাণী জাগ্রত হবে। প্রদীপ মণ্ডল হিন্দুদের জন্য সভা করেন। সেই দিন থেকে টার্গেট হয়েছেন তিনি। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। সন্দেশখালিতে শাহজাহান দাদাগিরি অতীত করেছি অতীত থাকবে।
বারংবার হিন্দুত্ব অস্ত্রে জোর দিয়ে হিন্দু ঐক্যবদ্ধ হোন বলে হুংকার দেন তিনি । তিনি আরও বলেন সন্দেশখালিতে ৭০০০ ভোটে বিজেপিকে লিড দিয়েছে। তৃণমূলকে হঠাতেই হবে। জোট বাঁধুন তৈরি হন। ভাগ হবেন না। হরগোবিন্দ দাস, গোবিন্দ দাসদের মেরেছে। মহম্মদ সেলিম সেকুলার নেতা বলেন। বলেছিল ওরা বামপন্থী করেন। আমি কোর্টের অর্ডার নিয়ে গেলাম ওইখানে। ওদের পরিবার বলল, “দাদা বামেদের ভোট দিই। কিন্তু বাম বলে মারেনি। গলায় তুলসি ছিল। তাই দেখে মেরেছে। পশু কাটার ছুরি দিয়ে নৃশংস ভাবে মেরেছে।”
“মায়েরা দেখেছেন ৩৩ বছরের রাজনৈতিক লড়াইয়ে দেখিনি ধর্ম দেখে হত্যা হয়। বিতান অধিকারীর স্ত্রী বলছেন, বিতান কলমা জানেন না, তাই মেরে দিল। এর প্রতিশোধ ভারতীয় সেনা নিয়েছে। জঙ্গিদের ঘাঁটি গুড়িয়েছে। মমতার তোষণের রাজনীতি কোথায় গেছে ভাবতে পারবেন না। ১৮০ টা সম্প্রদায়কে ওবিসি করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য সরকার। তার মধ্যে ১১৯ মুসলিম কমিউনিটি। ভারতের কোথাও নেই ওবিসি ‘এ’ ও ওবিসি ‘বি’।”
” হিন্দু বলে তৃণমূল অত্যাচার করছে। রাতের অন্ধকারে হিন্দু রক্ত বলিদান হচ্ছে। এদের পরিবর্তন হবে না। এদের মাথায় মমতার হাত আছে। তাই এরা বেপরোয়া। এদের জব্দ করতে শুকনো লঙ্কা জ্বালিয়ে তা নাকে জ্বালান। তবেই বিজেপি সরকার হবে। সাধারণ মানুষ বলছে ছাব্বিশে জনতা পার্টির সরকার হবে। তার আগেই অভিযুক্তদের শাস্তি হবে। আমি গোটা রাজ্যের হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ হতে বলব। না হলে বাঁচতে পারবেন না। বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন হচ্ছে প্রতিদিন। আপনাদেরও কেউ কেউ আত্মীয় থাকে জিজ্ঞাসা করুন।”
এই বিষয়টি খুব একটা নতুন নয় বাংলায়। প্রায়শই শোনা যায় কোন না কোন দলের দলকর্মী মারা গেছে। আর এই নিয়ে রাজনীতি করার একটা পথেরও উন্মোচন হয় রাজনৈতিক কারবারিদের ক্ষেত্রে। এই আবহেই বসিরহাটের সন্দেশখালি বিধানসভার কানমারী ভারত সেবাশ্রমের মাঠে হিন্দু অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে আত্ম বলিদানকারীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি সভা আয়োজন করা হয়েছে। সুত্রের খবর এই সভায় উপস্থিত থাকছেন রাজ্য বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শেষ লগ্নে তার প্রস্তুত পর্ব। সূত্রের খবর রবিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ তিনি মঞ্চে উঠবেন এবং কি বার্তা দেন তা শোনার জন্য দলের নেতাকর্মী সমর্থকরা সভা স্থলে আসছে। আজ সকাল দশটায় সন্দেশখালীর কানমারী ভারত সেবাশ্রমের মাঠে শ্রদ্ধাঞ্জলি সভা করতে আসছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই সবার জন্য কলকাতা বাসন্তী হাইওয়ের ন্যাজাট থানার অন্তর্গত বয়ারমারিতে একটি ওভার গেট করা হইয়েছিল।