Supreme Court Delhi Stray Dogs : দিল্লির রাস্তা থেকে সমস্ত কুকুরকে সরানোর ‘সুপ্রিম’ নির্দেশ! বাধা দিলে কঠোর সাজা

48

ডিজিটাল ডেস্ক, ১১ অগাস্ট : দিল্লি শহর থেকে পথকুকুরদের সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে—সোমবার এমনই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি আর মহাদেবনের ডিভিশন বেঞ্চ দিল্লি সরকার, দিল্লি পুরসভা এবং নয়াদিল্লি পুরসভাকে এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের স্পষ্ট বার্তা, এখনই কাজ শুরু করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে (Supreme Court Delhi Stray Dogs)।

বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও আর মাধবনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এদিন স্পষ্টভাবে জানায়, এনসিটি দিল্লি, এমসিডি এবং এনএমডিসি-সহ সমস্ত পুরসভাকে যত দ্রুত সম্ভব রাস্তাঘাট থেকে পথকুকুরদের ধরে সরিয়ে নিতে হবে। প্রয়োজনে এই কাজের জন্য আলাদা বাহিনী গঠন করতেও বলা হয়েছে। আদালতের মতে, শহরের প্রতিটি পাড়া-পড়শি অঞ্চলকে পথকুকুরমুক্ত করাই সংশ্লিষ্ট পুর কর্তৃপক্ষগুলির প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব। বিচারপতিদের কড়া বার্তা—এই বিষয়ে কোনও ধরনের শিথিলতা বা আপস বরদাস্ত করা হবে না। যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং কার্যকরভাবে রাস্তাঘাটকে পথকুকুর মুক্ত করতে হবে।

সম্প্রতি দিল্লিতে পথকুকুরের কামড়ের জেরে জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে শীর্ষ আদালত স্বতঃপ্রণোদিতভাবে পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে।

সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, যেসব এলাকা বিশেষভাবে স্পর্শকাতর, সেখান থেকে অবিলম্বে পথকুকুরদের সরাতে হবে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, পথকুকুরের কামড়ে জলাতঙ্ক এবং তার ফলে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এই সংক্রান্ত একাধিক রিপোর্টের ভিত্তিতেই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে শুনানি শুরু করে শীর্ষ আদালত। বিচারপতিরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, এই মামলায় শুধুমাত্র কেন্দ্রের বক্তব্যই শোনা হবে। কোনও পশুপ্রেমী সংগঠন কিংবা অন্য কোনও পক্ষের আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না। আদালতের মতে, এখন মানুষের জীবন ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার।

পথকুকুর ধরার সময় পশুপ্রেমীদের তরফে আপত্তির আশঙ্কা থাকলেও, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়েছে—এই প্রক্রিয়ায় কেউ বাধা দিলে, তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই দিল্লি সরকার জানিয়েছে, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তারা দ্রুত পদক্ষেপ করবে।উল্লেখযোগ্যভাবে, চলতি বছরের প্রথম ছ’মাসেই দিল্লিতে জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯ জন। পথকুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই পরিপ্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক। তাই আর সময় নষ্ট না করে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

শীর্ষ আদালতের মতে, এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবেই নেওয়া হয়েছে। পশুপ্রেমীদের উদ্দেশে আদালতের সরাসরি প্রশ্ন—পথকুকুরের কামড়ে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের কি ফেরানো সম্ভব? তাই রাস্তাঘাট থেকে পথকুকুরদের সম্পূর্ণভাবে সরানোই একমাত্র উপায়। আদালত আরও স্পষ্ট করেছে, পথকুকুরদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পোষার অনুমতি দেওয়া যাবে না। এই কাজের জন্য প্রশিক্ষিত ও দক্ষ কর্মীদের নিয়োগ করে কুকুরগুলিকে আটক করতে হবে এবং নির্দিষ্ট আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। সেইসঙ্গে, যত দ্রুত সম্ভব পর্যাপ্ত সংখ্যক কুকুর-আশ্রয় কেন্দ্র (shelter) গড়ে তোলার নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।