Supreme Court Interim Stay On OBC Certificate : ওবিসি শংসাপত্রের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশে অন্তর্বর্তী সুপ্রিম স্থগিতাদেশ

80

ডিজিটাল ডেস্ক, ২৮ জুলাই : ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দেওয়া নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের ওবিসি সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সমস্ত বিজ্ঞপ্তির উপর হাই কোর্ট সম্প্রতি স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। সোমবার প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের স্থলাভিষিক্ত প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই গবইয়ের নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ— যার অন্যান্য সদস্য ছিলেন বিচারপতি কে. বিনোদ চন্দ্রন ও বিচারপতি এনভি অঞ্জরিয়া— ওই স্থগিতাদেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেন (Supreme Court Interim Stay On OBC Certificate)।

এর আগে, চলতি বছরের জুন মাসে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিগুলির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে। সেই স্থগিতাদেশ ৩১ জুলাই পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছিল।

হাই কোর্টের এই রায়ের জেরে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনও সমস্যা দেখা দেবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। যদিও আদালত স্পষ্ট করেছিল, শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়ায় এর কোনও প্রভাব পড়বে না। তবুও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যায়। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্টের রায় আপাতত স্থগিত রাখল দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত মামলার শুনানির কথা থাকলেও প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ না বসায় তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে সোমবার মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে, কলকাতা হাই কোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশের সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই গবই এ বিষয়ে বলেন, “আমরা এই বিষয়ে নোটিস জারি করব। এটা অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয়! হাই কোর্ট কীভাবে এভাবে স্থগিতাদেশ জারি করতে পারে? আমরা ভেবেই অবাক হচ্ছি, ঠিক কোন যুক্তির ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে?” হাই কোর্টের রায়ের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়, বিষয়টি আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হবে।

সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময়ে প্রধান বিচারপতি স্পষ্টভাবে জানান, সংরক্ষণ নীতির বাস্তবায়ন কার্যনির্বাহী বা প্রশাসনিক বিভাগের অধীনে পড়ে। তিনি উল্লেখ করেন, এই বিষয়ে পূর্বে দেওয়া ইন্দিরা সাহনী মামলার রায়ে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল, সংরক্ষণের জন্য কোনও পৃথক আইন প্রণয়নের প্রয়োজন নেই— প্রশাসনের নির্দেশই যথেষ্ট। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ মৌখিক পর্যবেক্ষণে জানায়, কলকাতা হাই কোর্টের দেওয়া নির্দেশ ‘প্রাথমিকভাবে ভুল’ বলে মনে করা হচ্ছে। সেই মন্তব্যের ভিত্তিতে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট।

প্রধান বিচারপতি গবই আরও বলেন, “এই বিজ্ঞপ্তিগুলি জারির ক্ষেত্রে প্রশাসন কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। তা সঠিকও হতে পারে, আবার প্রশ্নবিদ্ধও হতে পারে। এই বিষয়ে চূড়ান্ত রায় হাই কোর্টই দেবে। কিন্তু আপাতত বিতর্কিত নির্দেশটি স্থগিত থাকছে।” এই নির্দেশে রাজ্যের ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত প্রশাসনিক প্রক্রিয়া আপাতত স্বাভাবিক রাখার পথ সুপ্রিম কোর্ট খুলে দিল।