ডিজিটাল ডেস্ক, ৪ অগাস্ট : রাহুল গান্ধী চিনের ভারতের ভূখণ্ড দখল সংক্রান্ত অভিযোগ তোলায় সুপ্রিম কোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়েছেন (Supreme Court On Rahul Gandhi)। রবিবার এক মানহানির মামলার শুনানিতে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত রাহুলকে প্রশ্ন করেন, “আপনি কীভাবে নিশ্চিত হলেন যে চিন ভারতের ২০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা দখল করেছে? আপনি কি ঘটনাস্থলে ছিলেন? আপনার কাছে কী কোনও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ আছে?” তিনি আরও বলেন, “যদি আপনি প্রকৃত ভারতপ্রেমী হতেন, তাহলে এমন মন্তব্য করতেন না।”
২০২৩ সালে কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ চলাকালীন রাহুল গান্ধী দাবি করেছিলেন যে, এক প্রাক্তন সেনা আধিকারিক তাঁকে জানিয়েছেন চিন ভারতীয় ভূখণ্ডের ২০০০ বর্গ কিলোমিটার দখল করে নিয়েছে। এই মন্তব্যের জেরে রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়। মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, কংগ্রেস নেতা দেশের সেনাবাহিনীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। এই মামলার বিরোধিতা করে রাহুল ইলাহাবাদ হাই কোর্টে যান, তবে আদালত তাঁর আর্জি খারিজ করে দেয়। এরপর তিনি মামলা খারিজের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সোমবার এই মামলার শুনানি হয় শীর্ষ আদালতের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি অগস্টিন জর্জ মসিহের বেঞ্চে।
দুই বিচারপতির বেঞ্চ তাদের পর্যবেক্ষণে জানান, লোকসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে রাহুল গান্ধী এই ধরনের মন্তব্য সংসদে করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে সমাজমাধ্যমে এই বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন। মামলার প্রাথমিক শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট মামলাটিতে স্থগিতাদেশ জারি করেছে এবং মামলাকারী ও উত্তরপ্রদেশ সরকারকে নোটিস পাঠিয়েছে।
তবে, রাহুল গান্ধীর পক্ষে থেকে মামলাটি খারিজের আবেদন জানানো হলে, সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট পক্ষদের উদ্দেশে নোটিস জারি করেছে। এর আগে, ২০২৪ সালের মে মাসে এলাহাবাদ হাই কোর্ট রাহুলের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ফৌজদারি মামলার সমন খারিজের আবেদন খারিজ করে দেয়। ওই মামলায় অভিযোগ ছিল, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রাহুল সেনাবাহিনী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন।
এই অভিযোগ করেছিলেন লখনউয়ের বাসিন্দা উদয়শঙ্কর শ্রীবাস্তব নামে এক ব্যক্তি। তাঁর দাবি, চিন সংক্রান্ত মন্তব্যের মাধ্যমে রাহুল গান্ধী সেনাবাহিনীর সম্মানহানির চেষ্টা করেছেন। রাহুল অবশ্য শুরু থেকেই এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে এসেছেন। তাঁর বক্তব্য, “সরকার যে চিন ভারতের জমি দখল করে বসে আছে, সেই বাস্তবতাকে অস্বীকার করে চলেছে। আর এটাই সবচেয়ে বিপজ্জনক।”
সরকারের ভূখণ্ড সংক্রান্ত নীতির কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, “চিনের সঙ্গে কঠোর ভাষায় কথা বলা উচিত। তাদের জানিয়ে দেওয়া দরকার যে তারা ভারতের জমিতে বসে রয়েছে— যেটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”