Supreme Court On Street Dogs : দিল্লির পথকুকুরদের নিয়ে রায় বদল! পুরনো রায় সংশোধন সুপ্রিম কোর্টের

69

ডিজিটাল ডেস্ক, ২২ অগাস্ট : পথকুকুরদের নিয়ে নিজের আগের রায়ে আংশিক সংশোধন আনল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court On Street Dogs)। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, সব পথকুকুরকে রাস্তা থেকে তুলে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হবে না। টিকাকরণ সম্পন্ন হলে, তাদের আবার আগের এলাকায় ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে।

বিচারপতি বিক্রম নাথ, সন্দীপ মেহতা ও এনভি আঞ্জারিয়ার তিন সদস্যের বেঞ্চ জানিয়েছে, যেসব কুকুরের মধ্যে আক্রমণাত্মক আচরণ দেখা যায় অথবা যারা জলাতঙ্কে আক্রান্ত, শুধুমাত্র তাদের টিকাকরণ এবং প্রয়োজনে পর্যবেক্ষণ করা হবে।

দিল্লির পথকুকুরদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী রায় ঘিরে দেশজুড়ে বিতর্ক এবং জনমত তৈরি হয়েছিল। বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ উঠেছিল। সেই প্রেক্ষিতেই শীর্ষ আদালত জানায়, বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখবে তিন বিচারপতির এই বেঞ্চ।

তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমের কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, যেসব কুকুর জলাতঙ্কে আক্রান্ত বা অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক স্বভাবের, তাদের আর রাস্তায় ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে তাদের স্থায়ীভাবে আশ্রয়কেন্দ্রেই রাখতে হবে। এছাড়া, আদালত রাস্তায় প্রকাশ্যে পথকুকুরদের খাওয়ানোর অনুমতি দেয়নি।

শুক্রবার দিল্লির পথকুকুর সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি সন্দীপ মেহতা এবং বিচারপতি এনভি অঞ্জরিয়ার তিন সদস্যের বেঞ্চে। এর আগে একটি দুই সদস্যের বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, দিল্লির রাস্তাগুলি থেকে সমস্ত পথকুকুরকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হবে। সেই রায়ের বিরোধিতা করে পশুপ্রেমী, পশুকল্যাণ সংগঠন এবং একাধিক এনজিও প্রতিবাদে সরব হয়।

এই বিরোধের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে বেঞ্চ পুনর্গঠন করেন। শুক্রবার নতুন গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ ওই মামলার রায় ঘোষণা করে।

দিল্লিতে পথকুকুরদের কামড়ে জলাতঙ্ক এবং সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় বিষয়টি গুরুত্ব পায় সুপ্রিম কোর্টে। চলতি মাসের শুরুতেই সেই সম্পর্কিত রিপোর্টের ভিত্তিতে শুরু হয় শুনানি। শীর্ষ আদালত জানায়, দিল্লি ও এনসিআর অঞ্চলের সমস্ত পথকুকুরকে অবিলম্বে ধরে নির্বীজকরণ করতে হবে এবং নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠাতে হবে।

প্রশাসনকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়, প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে হলেও পথকুকুরদের ধরতে হবে। কেউ বাধা দিলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানায় আদালত। আদালতের মতে, এই পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবেই।

তবে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে বহু সাধারণ মানুষ এবং পশুপ্রেমী সংগঠন প্রতিবাদে মুখর হয়। এই প্রবল বিতর্কের প্রেক্ষিতে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে আসে, যার পর তিনি নতুন বেঞ্চ গঠন করেন বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য।

সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে দিল্লির পশুপ্রেমীরা স্বাগত জানিয়েছেন। মামলাকারীদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করছেন, রায়ে একটি ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে। কারণ সকল পথকুকুরকে প্রমাণ ছাড়া ‘আগ্রাসী’ বা ‘হিংস্র’ বলে চিহ্নিত করা যুক্তিযুক্ত নয়। আদালতের এই সিদ্ধান্তে পশুপ্রেমীরা ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন।