ডিজিটাল ডেস্ক, ২৯ জুলাই : রাজস্থান, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, মহারাষ্ট্র সহ একাধিক বিজেপি ও এনডিএ শাসিত রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার ও হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাষা আন্দোলনের স্মরণে বীরভূম থেকে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও পোস্ট করেন তিনি, যেখানে এক ব্যক্তি বর্ণনা করছেন কীভাবে দিল্লি পুলিশ তার দেড় বছরের সন্তান ও স্ত্রীকে মারধর করেছে (Suvendu Adhikari On Mamata FIR)।
এই ভিডিও-র প্রসঙ্গ তুলে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লেখেন, “এই দেশে বাঙালিদের বিরুদ্ধে বিজেপি যে ভাষা-সন্ত্রাস ও হিংসার রাজনীতি শুরু করেছে, তা থেকে রেহাই পায়নি একরত্তি শিশুটিও। দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চাইছে এরা?” তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে দিল্লি পুলিশ। পূর্ব দিল্লির ডিসিপি অভিষেক ধানিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার বলে উল্লেখ করেছেন।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা তৈরি করা হয়েছিল মালদার এক রাজনৈতিক নেতার নির্দেশে। পূর্ব দিল্লির ডিসিপি অভিষেক ধানিয়া জানান, “ভিডিওটি সামনে আসার পর আমরা স্থানীয় গোয়েন্দাদের সহায়তায় তদন্ত শুরু করি। বিভিন্ন প্রযুক্তিগত পরীক্ষার মাধ্যমে একাধিক প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়। এরপর ভিডিওতে থাকা পরিবারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখনই জানা যায়, ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছিল পরিবারের এক আত্মীয়ের অনুরোধে, যিনি নিজেও রাজনৈতিকভাবে যুক্ত এবং যাঁর নির্দেশ এসেছিল মালদহের এক নেতার কাছ থেকে।”
ডিসিপি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এই ভিডিও সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দিল্লি পুলিশের রিপোর্টকে হাতিয়ার করে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, রাজনৈতিক স্বার্থে কি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যা প্রচারে লিপ্ত হয়েছেন?
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে বলেছেন, “গুজব ও ভুয়ো খবর ছড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেতেও পারেন!” তিনি দাবি করেন, দিল্লিতে বাঙালিদের হেনস্তার অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী যে ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন, তা যে সম্পূর্ণ ভুয়ো, তা দিল্লি পুলিশের তদন্তেই প্রমাণিত। শুভেন্দু বলেন, “মালদার এক তৃণমূল নেতার ইন্ধনে ওই ভিডিও তৈরি করা হয়েছিল। একজন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যদি কেউ মিথ্যা প্রচার করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে অবশ্যই এফআইআর হওয়া উচিত।”
আরও বলেন, “দিল্লিতে বসবাসকারী বাঙালিদের উচিত এই ভুয়ো প্রচারের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা। দিল্লি পুলিশ যেন সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়।” শুভেন্দু জানান, কাঁথির সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারীকে তিনি ইতিমধ্যেই ফোন করে অনুরোধ করেছেন, সংসদের অধিবেশন শেষ হওয়ার পর মঙ্গলবার দিল্লি পুলিশের সাইবার সেলে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে।