Tajpur Post Controversy : আদানির হাতছাড়া তাজপুর বন্দর! বাতিল হচ্ছে আদানি-চুক্তি! তাজপুর বন্দর নিয়ে নতুন টেন্ডার ডাকছে রাজ্য সরকার

14

ডিজিটাল ডেস্ক, ৩ জুন : চার বছর আগে আদানি গোষ্ঠীকে ছাড়পত্র দেওয়া হলেও প্রকল্পের কাজ বিশেষ অগ্রগতি হয়নি। অবশেষে, তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকার নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করতে চলেছে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে বন্দর প্রকল্পের চুক্তি বাতিলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে (Tajpur Post Controversy)।

চার বছর ধরে কাজ না-হওয়ায় তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই নতুন করে টেন্ডার আহ্বানের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। যদিও ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে টেন্ডার প্রসঙ্গে আলোচনা চলছিল, তবে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে জানানো হয়েছিল যে চুক্তিটি কার্যকর রয়েছে, যার ফলে বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সেই অনিশ্চয়তা দূর হয়েছে।

২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে রাজ্য সরকার ২৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের জন্য নতুন টেন্ডার আহ্বানের ঘোষণা করলেও, প্রথম টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে বাতিল করার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। এরপর রাজ্য সরকার পরিষ্কার জানায় যে আদানি গোষ্ঠী এখনও প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বন্দর নির্মাণের জন্য প্রতিরক্ষা, নৌপরিবহন, বিদেশমন্ত্রক এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অনুমোদন গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

সেই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে শর্তসাপেক্ষ নিরাপত্তা ছাড়পত্র দেওয়া হলেও প্রকল্পের অগ্রগতি হয়নি। রাজ্য সরকার তখন আইনি মতামত নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, “তাজপুর বন্দর তৈরি হবে। টেন্ডার প্রক্রিয়া রাজ্য অর্থ দফতর দেখবে, এবং আমরা এ বিষয়ে আইনি মতামত নিচ্ছি।” শেষ পর্যন্ত, সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভা নতুন টেন্ডার প্রক্রিয়ার জন্য অনুমোদন দিয়েছে।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে রাজ্য মন্ত্রিসভা তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির জন্য আদানি পোর্টস অ্যান্ড এসইজেড (APSEZ)-এর প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়। রাজ্যের প্রথম গভীর সমুদ্র প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে দুটি দরদাতা ছিল—আদানি পোর্টস এবং জেএসডব্লিউ ইনফ্রাস্ট্রাকচার। বিড জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ১৪ মার্চ, ২০২১। পরে, ২০২২ সালে APSEZ-এর পরিচালক করণ আদানিকে বন্দরের জন্য লেটার অফ ইন্টেন্ট দেওয়া হয়।

এই বন্দর সরাসরি ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং পরোক্ষভাবে আরও অনেককে উপকৃত করবে বলে রাজ্য সরকারের দাবি। কলকাতা থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বন্দরের অবস্থান ১১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে। এর ড্রাফট ১২ মিটারের বেশি হবে, যা উত্তরবঙ্গ এবং আসন্ন ডানকুনি ফ্রেইট করিডোরের সঙ্গে সহজ সংযোগ নিশ্চিত করবে।

প্রথম টেন্ডার অনুযায়ী, সফল দরদাতাকে বন্দরের উন্নয়নের জন্য ১২৫ একর সমুদ্রতীরবর্তী জমি এবং বন্দর-সংযুক্ত শিল্প উন্নয়নের জন্য ৪ কিলোমিটার দূরে এক হাজার একর জমি বরাদ্দ করা হবে, যেখানে অতিরিক্ত জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন নেই। তবে নতুন টেন্ডার প্রক্রিয়ায় এই শর্তগুলো অপরিবর্তিত থাকবে কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।