ডিজিটাল ডেস্ক, ১১ জুলাই : মালদহের লক্ষ্মীপুরে এক তৃণমূল নেতাকে হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে (TMC Killed TMC)। সূত্রের খবর, তৃণমূল নেতা আবুল কালাম আজাদ জন্মদিনের একটি পার্টিতে নিমন্ত্রিত ছিলেন, যা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল তাঁর এক বন্ধুর বাড়িতে। সেখানেই ঘরের মধ্যে তাঁকে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ।
এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আরেক তৃণমূল নেতা মইনুল শেখ, যিনি একসময় কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন, পরে আবার তৃণমূলে ফিরে আসেন। ঘটনাস্থল মালদহ জেলার ইংরেজবাজার থানার অন্তর্গত লক্ষ্মীপুর গ্রাম।
নিহত আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে জমি দখল, জাল সার্টিফিকেট ও নথি তৈরি-সহ একাধিক অভিযোগ ছিল। সম্প্রতি একটি মামলায় জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে জমি আত্মসাতের অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনার পেছনে তাঁর এক সময়ের ব্যবসায়িক সঙ্গী মইনুল শেখের হাত রয়েছে বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জমিজমা ও টাকার লেনদেন নিয়ে আবুল কালাম আজাদ ও মইনুল শেখের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছিল। দু’জনেই জমি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এবং সেই সূত্রেই সম্পর্কে ফাটল ধরে। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, নয় বিঘা জমির মালিকানা নিয়ে শুরু হওয়া ওই বিবাদই শেষ পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী পরিণতির দিকে গড়ায় এবং তার জেরেই ঘটে এই খুনের ঘটনা।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সী এই ঘটনায় দলের সংশ্লিষ্টতা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। অভিযুক্ত যেই হোক না কেন, আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।” ইতিমধ্যেই পুলিশ অভিযুক্ত মইনুল শেখকে আটক করেছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।
প্রসঙ্গত, মালদহের এই হত্যাকাণ্ডের ঠিক আগের দিনেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে হামলার শিকার হন আরেক তৃণমূল নেতা রজ্জাক খাঁ, যাঁকে বিধায়ক শওকত মোল্লার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তাঁকেও গুলি এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়। টানা দু’দিনে দুটি রাজনৈতিক খুনের ঘটনায় শাসকদলের অস্বস্তি বাড়ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।