Trump Munir Meet : পাক সেনাপ্রধান আসিমের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প, কারণ ঘিরে জল্পনা

8

ডিজিটল ডেস্ক, ১৮ জুন : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার ওয়াশিংটনে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের সঙ্গে বৈঠক করবেন (Trump Munir Meet)। হোয়াইট হাউসে আলোচনার পর দু’জনের মধ্যাহ্নভোজের পরিকল্পনা রয়েছে। এই বৈঠককে কেন্দ্র করে বিশ্ব কূটনৈতিক মহলে তীব্র কৌতূহল ও জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে। বৈঠকের উদ্দেশ্য ও সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে নানা বিশ্লেষণ চলছে, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পাক সেনাপ্রধানের আমন্ত্রণ সরাসরি ভারত-পাকিস্তান ইস্যুর সঙ্গে যুক্ত নাও হতে পারে। বরং, চলমান ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বিশেষ উদ্দেশ্যে তাঁকে আলোচনায় ডাকতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দু’দিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আমেরিকা বড় কোনো পদক্ষেপ নিতে চলেছে, যা নিয়ে কূটনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনার ঝড় উঠেছে। এই বৈঠক আন্তর্জাতিক মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

গত মাসের শেষদিকে পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির ইরান সফরে গিয়েছিলেন, যেখানে তিনি একান্ত বৈঠক করেন তৎকালীন ইরানি সেনাপ্রধান মহম্মদ হোসেইন বাঘেরির সঙ্গে। এরই মধ্যে ইজরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বাঘেরি নিহত হয়েছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্ভবত মুনিরের কাছ থেকে ইরানের সামরিক প্রস্তুতি সম্পর্কে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করতে চান, যা বৈঠকের অন্যতম উদ্দেশ্য হতে পারে।

পাকিস্তান ইতিমধ্যেই ইরানের পক্ষ নিয়ে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ইরান ঘোষণা করেছে যে প্রয়োজনে পাকিস্তান তাদের হয়ে ইজরায়েলে পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করবে। এ পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্ভবত পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে সতর্ক করতে পারেন, যাতে দেশটি এই সংঘাতে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে না পড়ে। ভারতের দৃষ্টিতে বহুদিন ধরেই পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির বিতর্কিত। ২০১৯ সালে আইএসআইয়ের দায়িত্বে থাকাকালে তাঁর কৌশলেই কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আধা সেনার কনভয়ে হামলা চালানো হয়, যেখানে ৪০ জন সেনা সদস্য নিহত হন। মুনির আইএসআইয়ের প্রধান থাকাকালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ভারতের সেনা ছাউনিতে একাধিকবার হামলা চালিয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলেছে। পরিস্থিতির উপর আন্তর্জাতিক মহল গভীর নজর রাখছে।

সদ্য ঘটে যাওয়া পহেলগাম হত্যাকাণ্ড এবং ভারত-পাক সংঘর্ষ শুরুর আগে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্য করেছেন পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির। তিনি বলেছেন, মুসলিমরা সংখ্যালঘু হিসেবে ভালো নেই, এবং এই কারণেই পাকিস্তান গঠনের প্রয়োজন হয়েছিল। এই বক্তব্যের ফলে রাজনৈতিক বিতর্ক ও আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠছে।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠককে পাকিস্তান তাদের কূটনৈতিক সাফল্য হিসাবে দেখছে। সদ্য ভারত-পাক সংঘর্ষ বিরতিতে আমেরিকা প্রথমেই পাক সেনাপ্রধানের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল বলে জানা গেছে। মুনির ১৪ জুন থেকে ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন, এই সময় তিনি মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। সম্প্রতি পাকিস্তান সরকার তাঁকে ‘ফিল্ড মার্শাল’ উপাধিতে সম্মানিত করেছে, যা অত্যন্ত বিরল। এই নতুন পদে তাঁর প্রথম বিদেশ সফর আমেরিকায়, যেখানে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে বসতে চলেছেন। আন্তর্জাতিক মহলে এই সাক্ষাৎ ঘিরে তীব্র আলোচনা চলছে।