ডিজিটাল ডেস্ক, ৫ অগাস্ট : উত্তরাখণ্ডে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে ভয়াবহ হড়পা বান ও ধসের ঘটনা ঘটেছে (Uttarakhand Disaster)। ক্ষীরগঙ্গা নদীর অববাহিকা এলাকায় জলের তীব্র তোড়ে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত চার জনের। এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ অন্তত ৫০ জন। সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে সেই বিপর্যয়ের ভিডিও, যেখানে দেখা যাচ্ছে—প্রবল স্রোতে ভেসে যাচ্ছে বাড়িঘর, দোকানপাট। স্থানীয় গ্রামগুলিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধার ও ত্রাণে নিয়োজিত হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, শুধু বহু বাড়িঘরই নয়, ক্ষীরগঙ্গা নদীর তীরে থাকা অন্তত ২০-২৫টি হোটেল ও হোমস্টেও প্রবল জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও আটকে রয়েছেন কমপক্ষে ১০-১২ জন। জানা গিয়েছে, ক্ষীরগঙ্গা নদীর উচ্চ অববাহিকায় মেঘভাঙা বৃষ্টির পর হঠাৎই নদীতে জলস্ফীতি শুরু হয়। উঁচু অঞ্চল থেকে স্রোতের তীব্রতায় দু’কূল ছাপিয়ে ফুঁসতে ফুঁসতে গ্রামাঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসে নদী, আর তার জেরে ঘটে ভয়াবহ বিপর্যয়।
হিমালয়ের কোলে অবস্থিত উত্তর ভারতের একাধিক রাজ্যে টানা বৃষ্টিপাতের জেরে সৃষ্টি হয়েছে বিপজ্জনক পরিস্থিতি। হরিদ্বারে গঙ্গা এবং কালী নদী উভয়ই বইছে বিপদসীমার ওপরে। লাগাতার ভারী বৃষ্টির ফলে উত্তরাখণ্ডের রাজধানী দেহরাদূনে সোমবার সমস্ত স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয়েছে।
এই আবহেই হড়পা বানের আশঙ্কা ছিল, যা সত্যি হয় উত্তরকাশী জেলার ধরালী গ্রামে। মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে অল্প সময়েই ব্যাপক পরিমাণে জল নেমে আসে, ফলে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটে। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, টানা বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে, অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা জলের তলায় চলে গিয়েছে। পর্যটন ও তীর্থযাত্রার অন্যতম কেন্দ্র গঙ্গোত্রীর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মেঘভাঙা বৃষ্টির কিছুক্ষণের মধ্যেই কাছের সুখী টপ এলাকায়ও প্রবল বৃষ্টিপাত হয়, যদিও সেখানে এখনও পর্যন্ত বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি।
দুর্যোগের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধারকাজ শুরু করে জেলা প্রশাসন। ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছায় রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী জানিয়েছেন, ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি)-এর ১৬ সদস্যও উদ্ধারকাজে যুক্ত হয়েছেন। এক্স হ্যান্ডলে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “উত্তরকাশীর ধারালি অঞ্চলে মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং উদ্বেগজনক। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থা উদ্ধারকাজে ব্যাপকভাবে নিয়োজিত রয়েছে। আমি নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছি এবং পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে। সবার নিরাপত্তার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি।”