ডিজিটাল ডেস্ক, ৪ অগাস্ট : রবিবার ইয়েমেন উপকূলে শরণার্থী বহনকারী একটি নৌকা ডুবে গিয়ে অন্তত ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে (Yemen Boat Capsize 68 Refugees Death)। এখনও পর্যন্ত অন্তত ৭৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সোমবার এই মর্মান্তিক ঘটনার তথ্য প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘের অভিবাসন সংস্থা (IOM)। সংস্থার দাবি, ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে মোট ১৫৪ জন যাত্রী ছিলেন, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন আফ্রিকার নাগরিক ।
জানা গেছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ইয়েমেনের আবিয়ান প্রদেশের কাছে অ্যাডেন উপসাগরে। ওই অঞ্চলের স্বাস্থ্য অধিকর্তা আবদুল কাদের বাজামেল জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর মাত্র ১০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৯ জন ইথিয়োপিয়ার নাগরিক এবং একজন ইয়েমেনের বাসিন্দা। এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ, এবং তাঁদের খোঁজে গভীর রাত পর্যন্ত তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের কাজ চলছে ওই এলাকায়।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) হর্ন অফ আফ্রিকা ও ইয়েমেনের মাঝের এই সমুদ্রপথকে বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক রুট হিসেবে সতর্ক করে উল্লেখ করেছে। সংস্থার মতে, নিরাপদ জীবন ও কর্মসংস্থানের খোঁজে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ ইথিওপিয়া ও সোমালিয়া থেকে এই পথ ধরে ইয়েমেনে ঢোকার চেষ্টা করেন, যাদের মূল লক্ষ্য ইয়েমেন পেরিয়ে সৌদি আরব কিংবা অন্যান্য উপসাগরীয় দেশে পৌঁছনো।
আইওএম-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে এই বিপজ্জনক পথে যাত্রা করেছিলেন প্রায় ৯৭,২০০ জন অভিবাসী। ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬০ হাজারে। গত বছর এই সমুদ্রযাত্রায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৫৮ জন, নিখোঁজ হয়েছেন ২,০৮২ জন। ইয়েমেনে চলমান মানবিক ও রাজনৈতিক সংকট সত্ত্বেও এই বিপজ্জনক যাত্রা থেমে নেই। তবে সমুদ্রপথে নজরদারি ও টহল বাড়ানোর ফলে সাম্প্রতিক সময়ে অভিবাসী প্রবাহে কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছে।
প্রসঙ্গত ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ইয়েমেনের স্বীকৃত সরকার ও হাউথি বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকে দেশে সহিংসতা কিছুটা কমেছে। তবে এই পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে নজরদারি ও নিরাপত্তা কড়াকড়িও বেড়েছে। ফলে নতুন জীবনের আশায় ইয়েমেনে প্রবেশ করা বহু অভিবাসী সেখানে আটকে পড়ছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বর্তমানে ইয়েমেনে প্রায় ৩৮০,০০০ শরণার্থী ও অভিবাসী অবস্থান করছেন। যাঁদের অনেকেই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।