Calcutta University Exam Postponed Update : ২৮ অগস্টের সিদ্ধান্তে অনড় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য
ডিজিটাল ডেস্ক, ২৬ অগাস্ট : আগামী ২৮ অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও মেয়ো রোডে কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে এবার সেই তারিখেই নির্ধারিত রয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের BA, BSc, B.Com ও B.A. LLB-র চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষার দিন পিছোনোর দাবিতে ফের চাপের মুখে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে।
সোমবার একাধিক কলেজের অধ্যক্ষ পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তনের আর্জি জানিয়ে উপাচার্যকে চিঠি পাঠান। সুরেন্দ্রনাথ কলেজ, বঙ্গবাসী কলেজ-সহ বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ছাত্রছাত্রী, অশিক্ষক কর্মী ও কিছু ছাত্র সংগঠন নাকি পরীক্ষায় অংশ নিতে আগ্রহী নয়। তাঁদের দাবি, ওই দিন পরীক্ষা হলে অনেকেই সমস্যায় পড়বেন।
তবে এই দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে শান্তা দত্ত দে স্পষ্ট ভাষায় জানান, “পরীক্ষা কি কোনও পিকনিক? বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার মেনেই পরীক্ষার দিন নির্ধারণ করেছে। পরীক্ষায় বসা ছাত্রছাত্রীদের দায়িত্ব। অধ্যক্ষেরা যদি এভাবে চিঠি ফরওয়ার্ড করেন, তবে শিক্ষায় শৃঙ্খলা বলে কিছু থাকবে না (Calcutta University Exam Postponed Update)।”
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ২৮ অগস্টের পরীক্ষার সূচিতে কোনও পরিবর্তন হবে না। তাঁর কথায়, “পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। এটা সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত।” তিনি আরও জানান, প্রায় ৩০ হাজার পরীক্ষার্থী যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন, সেই লক্ষ্যে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের পদস্থ কর্তাদের কাছে লিখিতভাবে নিরাপত্তার আবেদন জানানো হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বিতর্কের পারদ চড়ছে কলেজ স্ট্রিট চত্বরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতারা মঞ্চ বেঁধে প্রকাশ্যে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁদের অভিযোগ, “রাজনৈতিক নির্দেশ মেনে চলতেই ইচ্ছাকৃতভাবে ২৮ তারিখেই পরীক্ষা নির্ধারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়।”
এর আগেও শিক্ষা দফতরের তরফে পরীক্ষার দিন পরিবর্তনের অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এবার অধ্যক্ষদের চিঠি নতুন করে চাপের পরিবেশ তৈরি করেছে। শিক্ষক সংগঠন ‘নিখিলবঙ্গ শিক্ষক পরিষদ’ মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা দফতরকে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও পরীক্ষার তারিখ পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেছিলেন। তবু সেই আর্জিও মানা হয়নি।
সব মিলিয়ে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত পরীক্ষার দিন এক হয়ে যাওয়ায় শিক্ষা ও প্রশাসনিক মহলে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। কিন্তু শান্তা দত্ত দে-র অবস্থান এখনও অনড়—“পরীক্ষা পিছোবে না।”