Sonarpur News: আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান-এ বিক্ষোভ বারংবার !গ্রেফতার আগ্নেয়াস্ত্রসহ তৃণমূল নেতা

74

ডিজিটাল ডেস্ক ২৪শে অগাস্টঃ আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের প্রকল্প। প্রকল্পের শুরুটা ঠিকঠাক হলেও মাঝেই মাঝেই নানা ধরনের ঝামেলা, হুমকির খবর উঠে আসছে এই প্রকল্প চলাকালীন বা কখনও আবার প্রকল্পকে ঘিরেই। আর এবার আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান ক্যাম্পে জয় ঘোষ নামে এক সক্রিয় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীকে চোর চোর স্লোগান দিতে দেখা যায় কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে । সেই তৃণমূল নেতা এবার সরাসরি সোনারপুর থানার পুলিশি অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ধরা পড়ল(Sonarpur News) ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে আয়োজিত আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান ক্যাম্পে কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতেও অংশ নিয়েছিলেন জয়। এদিন তাঁর গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। ঘটনায় মুখ খুলেছেন ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সোনালী রায়। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন তিনি। তাই এদিনের গ্রেফতারে খানিকটা স্বস্তি পেলেও আতঙ্ক কাটেনি তাঁর। সোনালী রায়ের বক্তব্য, ‘‘আমার সঙ্গে জয় ঘোষ কোনওদিন পার্টি করেনি। বরং দীর্ঘদিন ধরেই সোশাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে হুমকি দিচ্ছিল বলে জানান তিনি।’’ অন্যদিকে, পুলিশ সূত্রে খবর, জয় ঘোষের নামে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। অতীতে বিভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। তাই এদিনের গ্রেফতারকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় আর্মস অ্যাক্টে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

বেশ কিছুদিন আগেই বাঁকুড়ার খাতড়া ব্লকের ধানাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চাকা নির্মলানন্দ হাইস্কুলে বিডিও-র বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে স্কুল চলাকালীন ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচি আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি নিজে। এই নিয়েই বিডিও-সহ স্থানীয় পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন ওই স্কুলের অভিভাবকরা ৷ এমনকি বিরোধী বিজেপির তরফেও বিডিও-র বিরুদ্ধে দায়িত্বজ্ঞানহীনতা অভিযোগ তোলা হয়েছে ৷ পাশাপাশি, শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে শিক্ষা ব্যবস্থা ও ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অবহেলার অভিযোগ করা হয়েছে ৷ অভিযোগ, খাতড়ার বিডিও দেবজিৎ রায় নিজে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে সরকারিভাবে ইমেল করেন ৷ সেখানে শনিবার স্কুলে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আয়োজনের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্লাসরুম খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দেন ৷ পাশাপাশি, স্কুলে পঠনপাঠনও চলবে বলে জানিয়ে দেন বিডিও ৷ খাতড়া ব্লকের 107, 112 ও 114 নম্বর বুথের ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আয়োজন হয় ৷ আর এই পুরো ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন খাতড়া পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সদস্য উমা পতি ৷ তাঁর নেতৃত্বে প্যান্ডেল বেঁধে, মাইক ও ধামসা-মাদল বাজিয়ে সরকারি এই কর্মসূচি চলে বলে অভিযোগ বিরোধী সহ ওই স্কুলের অভিভাবকদের।

শুধু তাই নয় এবারে সোনারপুরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলনেতাকে আগ্নেয়আস্ত্র সহ ধরা পড়ার ঘটনাকে তীব্র কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা সুনীপ দাস রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘এই রাজ্যে এত অস্ত্র আসছে কোথা থেকে? পুলিশ প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের কারণে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।’’ বামনেতা সায়ন ব্যানার্জির বক্তব্য সোনারপুরটা অস্ত্র কারবারিদের জায়গা হয়ে উঠেছে। এটা দুশ্চিন্তার। এরা সব বিধায়কের ছত্রছায়ায় রয়েছে বলে তার অভিযোগ। বিধায়ক সবাইকে নিয়ে চলতে পারছেন না। অস্ত্রসহ জয় ঘোষের গ্রেফতার ঘিরে রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে তরজা। একদিকে শাসকদল থেকে দূরত্ব বজায় রাখার দাবি, অন্যদিকে বিরোধীদের কটাক্ষ—সব মিলিয়ে সোনারপুরে ফের উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিবেশ।