TMC Criticized Modi : দমদমের মঞ্চে মোদির মুখে প্রশাসনিক দুর্নীতি! শুভেন্দুর ভিডিও দেখিয়ে তৃণমূলের পালটা!

57

ডিজিটাল ডেস্ক, ২২ অগাস্ট : দুর্নীতি নিয়ে মোদীর আক্রমণের পালটা দিতে সময় নষ্ট করেনি তৃণমূল কংগ্রেস। দমদমের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন বিতর্কিত ‘মন্ত্রিত্ব বাতিল’ সংক্রান্ত বিলের প্রসঙ্গ তোলেন, আর সেই সূত্রে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে সরাসরি নিশানা করেন (TMC Criticized Modi)।

তাঁর এই মন্তব্যের কয়েক মিনিটের মধ্যেই পালটা জবাব দেয় তৃণমূল। সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবং ডঃ শশী পাঁজা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নারদা-কাণ্ডে জড়িত থাকার ভিডিও সামনে এনে মোদিকে কটাক্ষ করেন। কুণাল ঘোষ বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছেন, অথচ নিজের দলে যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁদের নিয়ে একটাও শব্দ নেই!”

এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল ঘোষ তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, “কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুঁড়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদী। যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ, তাঁরাই মোদীর মঞ্চে পাশে বসে ছিলেন।” এরপরই মোদীকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন কুণাল। বলেন, “প্রথমে নিজের দলে থাকা দুর্নীতিগ্রস্তদের দূরে সরিয়ে দেখান, তারপর অন্যদের শিক্ষা দিন।”

দমদমের সভা থেকে বিতর্কিত ‘মন্ত্রিত্ব বাতিল’ বিল নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ান। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়ার পরেও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পদ ছাড়তে চাননি— এই অভিযোগ তুলে মোদী বলেন, “রেশন দুর্নীতিতে ধরা পড়া আরেক তৃণমূল মন্ত্রীও মন্ত্রিত্ব আঁকড়ে ছিলেন। জনতার ভাবনার কোনও মূল্য নেই এঁদের কাছে। মানুষকে প্রতারণা করা হচ্ছে।” এরপরই মোদী কড়া হুঁশিয়ারি দেন, “সংবিধানের অপমান কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।”

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের কিছু সময়ের মধ্যেই তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে পালটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “দলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের আগে সরান মোদীজি। নিজের ঘর সামলান, তারপর অন্যদের শিখিয়ে দেবেন।”

তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ প্রধানমন্ত্রী মোদীর দুর্নীতিবিরোধী বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদে বলেন, “উনি আজ দুর্নীতি নিয়ে কথা বলছেন, অথচ আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই স্পষ্ট করেছেন— হিমন্ত বিশ্ব শর্মা থেকে শুরু করে মহারাষ্ট্রের অজিত পাওয়ার, বাংলার বিরোধী দলনেতা— এঁদের বিরুদ্ধেই এক সময় বিজেপি নিজেই গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু পরে সবাই তদন্ত এড়াতে বিজেপিতে গিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।”

শুভেন্দু অধিকারীর নারদা-কাণ্ডের ভিডিও তুলে ধরে কুণালের কটাক্ষ, “যখন নরেন্দ্র মোদী দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলছেন, তখন তাঁর মঞ্চেই এমন একজন বসে রয়েছেন, যাঁর বিরুদ্ধেই বিজেপি আগে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল ও গ্রেফতার চেয়েছিল। পরে তিনিই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।” কুণাল আরও বলেন, “নরেন্দ্র মোদী কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুঁড়েছেন। এর পরেও বাংলায় যাতায়াত করতে পারেন, কিন্তু বাস্তব হল— এখানে বিজেপি গো-হারা হারবে।”

প্রসঙ্গত দমদমের কেন্দ্রীয় জেল ময়দানে আয়োজিত সভা থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সংসদে পেশ হওয়া নতুন ‘মন্ত্রিত্ব বাতিল’ বিলের প্রসঙ্গ টেনে দুর্নীতি নিয়ে ফের তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করেন তিনি। বক্তৃতার সময় মোদী স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন জেলে থাকা প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং জামিনে মুক্ত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই পালটা জবাব দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। সাংবাদিক বৈঠক করে শুভেন্দু অধিকারীর নারদ স্টিং অপারেশনের ভিডিও সামনে এনে বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণে নামে তৃণমূল। দলের মুখপাত্রদের অভিযোগ, দুর্নীতি নিয়ে কথা বলার নৈতিক অধিকারই নেই বিজেপির, কারণ তাদের নিজেদের শিবিরেই রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত নেতারা।