ডিজিটাল ডেস্ক, ৪ জুন : বোলপুরের ভাইরাল অডিও কাণ্ডে এবার থানার আইসি লিটন হালদারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ (Anubrata Mondal Update)। সূত্রের খবর, তদন্তের স্বার্থে তাঁর মোবাইল ফোনও সিজ করা হতে পারে।
গত বৃহস্পতিবার, বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে হুমকি ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ ওঠে বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। এই অডিও ক্লিপ সোশ্যাল মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়, যেখানে আইসি, তাঁর মা ও স্ত্রীকে কদর্য ভাষায় অপমান করতে শোনা যায়। ঘটনাটি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস কড়া বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
দলের চাপের মুখে অনুব্রত মণ্ডল প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। মোবাইল হুমকি কাণ্ডে তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। যদিও দু’বার তলব করা হলেও, এখনও পর্যন্ত তিনি হাজিরা দেননি। এরই মধ্যে, সূত্রের খবর অনুযায়ী, বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, আইসির মোবাইল থেকে অডিও ক্লিপ বিজেপির হাতে কীভাবে পৌঁছল, সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। এবার পরোক্ষভাবে একই প্রশ্নের সূত্র ধরে জেলা পুলিশ আইসি লিটন হালদারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে। তবে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি বীরভূমের এসপি আমনদীপ। তাঁর মোবাইল ফোন রিং হলেও, তিনি মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন। একইভাবে, এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি বোলপুরের আইসি লিটন হালদারও।
বোলপুর থানার আইসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসায় রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, অনুব্রত মণ্ডলকে রক্ষা করতে আইসিকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আগেই দাবি করেছিলেন, “ভাইরাল অডিও কাণ্ডে অনুব্রতর কিছু হবে না, তবে আগামীদিনে বোলপুরের আইসিকে সাসপেন্ড করা হবে।” পদ্ম শিবিরের মতে, ঘটনা পরম্পরা সেই দিকেই এগোচ্ছে।
যদিও পুলিশ সূত্রের মতে, বিষয়টি এভাবে দেখা ঠিক নয়। তাঁদের দাবি, যেমনভাবে অনুব্রত মণ্ডল আইসিকে ফোনে হুমকি দিয়ে দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন, তেমনই আইসির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি অডিও ক্লিপিংস অন্যকে দিয়ে তদন্তের বিষয়বস্তু ফাঁস করেছেন। তদন্তাধীন কোনও বিষয় প্রকাশ করা উচিত নয়, তাই আইসির ভূমিকা খতিয়ে দেখার জন্যই বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সোশ্যাল মাধ্যমে ফাঁস করেন বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে দেওয়া অনুব্রত মণ্ডলের মোবাইল হুমকির অডিও। সেই সময়ই অনুব্রত প্রশ্ন তোলেন, বিজেপির কাছে এই অডিও কীভাবে পৌঁছল। পরে তিনি নিজের ব্যবহৃত ভাষার জন্য ক্ষমা চাইলেও, গোটা ঘটনায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন। এবার সেই প্রসঙ্গেই আইসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ।