ডিজিটাল ডেস্ক, ৫ জুন : কলকাতা হাই কোর্টে ইউটিউবার শর্মিষ্ঠা পানোলির জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে (Youtuber Calcutta High Court Bail)। বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরী তাঁকে ১০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে তাঁকে। তিনি অনুমতি ছাড়া দেশ ছাড়তে পারবেন না। তবে পড়াশোনার প্রয়োজনে বিদেশে যেতে হলে নিম্ন আদালতের অনুমতি নিতে হবে। শর্মিষ্ঠাকে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা দিতে হবে, তবে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, অপারেশন সিঁদুরের প্রশংসা করে শর্মিষ্ঠা পানোলি নির্দিষ্ট ধর্মকে ঠিক কোন ভাষায় অপমান করেছেন, তা অভিযোগপত্রে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। যে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল, তা শুধুমাত্র পুলিশকে গ্রেফতার করার অধিকার দিয়েছে, কিন্তু গ্রেফতার করতেই হবে—এমন নির্দেশ দেয়নি। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। শর্মিষ্ঠার আইনজীবীর দাবি, “আদালত কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেনি। শুধুমাত্র তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার অধিকার দিয়েছে এবং গ্রেফতার করার অধিকার আছে বলে জানিয়েছে। তবে গ্রেফতার করতে হবে বলে কোনও নির্দেশ দেয়নি।” বিচারপতি এই যুক্তির সঙ্গে সহমত পোষণ করেন এবং বলেন, “প্রাথমিকভাবে আদালতের এই নির্দেশকে আমি গ্রেফতারি পরোয়ানা বলে মনে করছি না।” রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত সওয়াল করেন, “অধিকার দেওয়া মানেই অনুমতি দেওয়া। এটাই যথেষ্ট।” বৃহস্পতিবার এজলাসে দাঁড়িয়ে তিনি আরও বলেন, “শর্মিষ্ঠা পানোলির উচিত ছিল জামিনের জন্য নির্দিষ্ট বেঞ্চে আবেদন জানানো।”
রাজ্যের আইনজীবী মামলাটি নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানোর পক্ষে সওয়াল করেন। তাঁর যুক্তি ছিল, “যদি অভিযোগ থেকে ধর্তব্যযোগ্য বা আদালতগ্রাহ্য অপরাধের প্রমাণ মেলে, তাহলে পুলিশ FIR দায়ের করতে পারে।” তিনি জানান, পুলিশ শর্মিষ্ঠা পানোলিকে নোটিস দিতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিল, কিন্তু তিনি সেখানে ছিলেন না। এরপর সমস্ত নিয়ম মেনে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তবে এই যুক্তিতে কিছুটা ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। তিনি বলেন, “যদি শর্মিষ্ঠা পানোলিকে গ্রেফতার করা হয়, তাহলে তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদেরও গ্রেফতার করা উচিত। একজন মহিলাকে যে ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে, তা আমাদের লজ্জিত হওয়া উচিত।” শুনানির শেষ পর্যায়ে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “তদন্ত কি শেষ হয়েছে?” রাজ্যের আইনজীবী জানান, তদন্ত এখনও শেষ হয়নি, কারণ শর্মিষ্ঠাকে এখনও পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে নেওয়া যায়নি। বিচারপতি স্মরণ করিয়ে দেন, “এই অভিযোগে সর্বোচ্চ সাজার মেয়াদ তিন বছর। এটা মাথায় রাখতে হবে। তিনি একজন ছাত্র।” শুনানি শেষে বিচারপতি রাজা বসু শর্মিষ্ঠাকে অন্তর্বর্তী জামিনের নির্দেশ দেন।