ডিজিটাল ডেস্ক ৬ জুনঃ জীবনযাপনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে জ্বালানি। আজ কলকাতায় পেট্রলের দাম লিটার প্রতি ১০৫.৪১ টাকা, গতকালের তুলনায় পেট্রলের দাম পরিবর্তিত হয়েছে ০.০০ শতাংশ। অন্য দিকে, আজ ডিজ়েলের দাম প্রতি লিটারে ৯২.০২ টাকা। ডিজ়েলের দামের পরিবর্তন হয়েছে ০.০০ শতাংশ। পাশাপাশি এ দিন কলকাতায় ১৪.২ কিলো রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম ৮৭৯ টাকা (Todays Market Price)।
সংসার খরচের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে ওষুধের দাম। আর এই জোড়া ফলার আঘাতেই সঞ্চয় এখন কার্যত দিবাস্বপ্নে বদলে গিয়েছে মধ্যবিত্তের। বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিক, যাঁদের দিন গুজরান হয় সুদের টাকায়। পরিস্থিতি এমন দিকে গড়াচ্ছে, স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে লগ্নি তো দূরঅস্ত, জমানো টাকাই ভাঙিয়ে নিতে হচ্ছে তাঁদের। আর মধ্যবিত্তের এই নাজেহাল দশায় ধাক্কা খাচ্ছে নরেন্দ্র মোদি সরকারের স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে এই খাতে জনসাধারণের বিনিয়োগের পরিমাণ কমেছে ৮০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। অর্থমন্ত্রকের আওতায় থাকা সঞ্চয় প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম সিনিয়র সিটিজেনস সেভিংস স্কিম। সেটিতেই এখন সবচেয়ে বেশি সুদ মেলে। অর্থমন্ত্রকের অন্তর্বর্তী হিসেব বলছে, সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছে এই স্কিমই। এক বছরে প্রবীণ নাগরিকদের সঞ্চয় প্রকল্পে জমার পরিমাণ কমেছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। ভালো ফল করেনি পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড বা পিপিএফও। কেন এবার এতটা ধরাশায়ী হল প্রকল্পগুলি, তার জুতসই কোনও ব্যাখ্যা নেই কেন্দ্রের কাছে। পাশাপাশি আজকের বাজারদর ও চরমে উঠেছে-
আলু- ৩০-৩৫ টাকা
পেয়াজ-২৫-৩৫ টাকা
সজনে- ৯০-১০০ টাকা
ঢেঁড়স- ৩০-৪০ টাকা
পটল- ৪০-৫০ টাকা
লেবু-৬-১০ টাকা
চাল- ৬৫ টাকা
মুগ ডাল-৯০-১২০ টাকা
মুসুর ডাল-৯০-১০০ টাকা
কুমড়ো – ২০-২৫ টাকা
স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির মধ্যে সিনিয়র সিটিজেনস সেভিংস স্কিম এবং সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনায় বার্ষিক সুদের হার সর্বাধিক। ৮.২ শতাংশ। ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেটে তা ৭.৭ শতাংশ, মান্থলি ইনকাম স্কিম বা এমআইএসে ৭.৪ শতাংশ এবং পাঁচ বছরের মেয়াদি আমানতে ৭.৫ শতাংশ। এছাড়া পিপিএফে ৭.১ শতাংশ, পাঁচ বছরের রেকারিং ডিপোজিটে তা ৬.৭ শতাংশ, ৫ বছরের মেয়াদি আমানতে ৭.৫ শতাংশ, তিন বছরের মেয়াদি আমানতে ৭.১ শতাংশ, দুবছরের মেয়াদি আমানতে ৭ শতাংশ এবং এক বছরের ক্ষেত্রে তা ৬.৯ শতাংশ হারেই সুদ পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ডাকঘরে সেভিংস অ্যাকাউন্টে তা মাত্র ৪ শতাংশ। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে এই সুদের হার চালু আছে। তথ্য বলছে, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই হার কম ছিল। তারপরই সুদ বাড়ানো হয়। করোনাকাল থেকে যেভাবে মূল্যবৃদ্ধির কোপে পড়েছে দেশ, তাতে সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে সুদের হার বাড়ানো ছাড়া উপায় ছিল না। পাশাপাশি লোকসভা নির্বাচনের আগে আমজনতাকে খুশি করতেও তা বৃদ্ধি করার কৌশল নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। তা সত্ত্বেও কেন সঞ্চয়মুখী হলেন না প্রবীণ নাগরিক থেকে সাধারণ মানুষ? সেটাই অন্যতম বড় প্রশ্ন থেক যাছে ।
পিপিএফ, সুকন্যা সমৃদ্ধি বা সিনিয়র সিটিজেনস সেভিংস স্কিমের মতো প্রকল্পগুলি ডাকঘরের পাশাপাশি ব্যাঙ্ক থেকেও কেনা যায়। দেখা যাচ্ছে, ব্যাঙ্ক ও ডাকঘর— দুক্ষেত্রেই এই সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে জমা টাকার পরিমাণ কম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমানত বা সঞ্চয় কম হওয়ার সমস্যায় ব্যাঙ্কগুলিকে ভুগতে হয়েছিল গত অর্থবর্ষে। নগদ জোগান কম থাকা নিয়ে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রকে। দুশ্চিন্তায় ছিল অর্থমন্ত্রকও। সঞ্চয়ে খামতির জের যে স্মল সেভিংস স্কিমগুলিতেও পড়েছে, তা এবার স্পষ্ট হয়েছে অর্থমন্ত্রকের রিপোর্টে।