Sodepur Torture Update : সোদপুরের নির্যাতিতার কেটে নেওয়া চুল মিলল শ্বেতার ফ্ল্যাটের পিছনে!

13

ডিজিটাল ডেস্ক, ১০ জুন : হাওড়ার শ্বেতা খাতুন, ওরফে শ্বেতা খান, মহসিনা বেগম, ওরফে ফুলটুসি—সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে লিখেছিলেন, “চারো তরফ হ্যায় মেরে হি চর্চে।” গত শুক্রবার থেকে তাঁকে ঘিরে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে (Sodepur Torture Update)। অভিযোগকারীদের তালিকায় রয়েছেন তাঁর প্রাক্তন স্বামীও। শাসক দলের সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র নিয়ে তীব্র শোরগোল শুরু হয়েছেন। তবে ছেলে আরিয়ান খানকে নিয়ে এখনও পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন শ্বেতা। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সোদপুরের এক তরুণীকে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রায় পাঁচ মাস আটকে রেখে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন চালিয়েছেন বলে শ্বেতা এবং তাঁর পুত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ। তরুণীর পরিবারের দাবি, তাঁকে দিয়ে পর্ন ভিডিও বানানোর চেষ্টা করেছিলেন হাওড়ার বাঁকড়ার ওই মা-ছেলে। পুলিশে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকে শ্বেতা বা আরিয়ানের কোনও খোঁজ মেলেনি। সোমবার তাঁদের বাঁকড়ার ফ্ল্যাটের পিছন দিক থেকে একগোছা মাথার চুল উদ্ধার করেছে পুলিশ। মনে করা হচ্ছে, ওই চুল সোদপুরের নির্যাতিতার। কারণ, তাঁকে নির্যাতনের সময় মাথার চুল কেটে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছে তরুণীর পরিবার।

এখানেই কাহিনি থেমে নেই। বাঁকড়া ফকিরপাড়ার পাশেই জমাদার পাড়া। সেখানকার এক প্রান্তিক পরিবারের কর্তা, নুর আলম জানান, ২০২৩ সালে তাঁর স্ত্রীর শারীরিক অসুস্থতার জন্য চিকিৎসা করাতে গিয়ে তিনি আর্থিক সংকটে পড়েন। তখন তিনি শ্বেতাকে ‘বড়লোক’ বলে চিনে তাঁর কাছে দু’লক্ষ টাকা ধার চান এবং পানও। নুরের কথায়, ‘‘১০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে ওই টাকার অঙ্ক ধার দেওয়া হয়েছে বলে লেখা ছিল, কিন্তু তাতে আরও এক লক্ষ টাকা সুদের কথা উল্লেখ করা হয়। তাতে লেখা ছিল, এক বছরের মধ্যে সুদে-আসলে সব টাকা ফেরত দিতে হবে। কিন্তু সময়মতো পুরো টাকা শোধ করতে না পারায় ওঁর লোকজন আমাদের বাড়িতে আসে। তারা আমাদের বাড়িতে তালা মেরে দখল নেওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে আমার স্ত্রীকে মারধরও করা হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘তখন শ্বেতা হুমকি দেন যে, আমি নাকি বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছি! তবে স্থানীয় মানুষজন আমার পাশে দাঁড়ান। পরে বুঝি, টাকার দরকারের সুযোগ নিয়ে বাড়ির কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে ওঁই বাড়িটা নিজের নামে করে নিয়েছিলেন। এটা ছিল একেবারে পরিকল্পিত ছলনা।’’

প্রসঙ্গত ভোটার কার্ড এবং অন্যান্য পরিচয়পত্রে শ্বেতার নাম মহসিনা বেগম। তবে এলাকায় তাঁর পরিচিতি ফুলটুসি নামে। সেই ‘ফুলটুসি’র কথা বলতে গিয়ে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, অপরাধীদের সঙ্গে ওর ওঠাবসা ছিল। এলাকার মানুষজন জানাচ্ছেন, এমন মহিলা তাঁদের এলাকায় থাকুন, সেটা চাইছেন না তাঁরা। বাসিন্দাদের কথায়, বাঁকড়ার নাম খারাপ করেছে শ্বেতা খান। প্রয়োজনে ওঁর বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর করে প্রশাসনের কাছে দেওয়া হবে, যাতে ওই এলাকা থেকে বিতাড়িত করা হয় এই পরিবারকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ফুলটুসির সঙ্গে ওড়িশার এক ব্যবসায়ীর যোগ পাওয়া গিয়েছে। ওড়িশায় গিয়ে অশ্লীল ভিডিও বানিয়েছেন তিনি। সোদপুর কান্ডে অভিযুক্ত ছেলে আরিয়ান এবং মা শ্বেতা খান সম্পর্কে একের পর এক কুকীর্তির নতুন তথ্য উঠে আসছে বাঁকড়া এলাকা থেকে।