ডিজিটাল ডেস্ক, ১৬ জুন : ইরান-ইজরায়েলের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইরানে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছিল। এই পরিস্থিতিতে সোমবার থেকে তাঁদের আর্মেনিয়া হয়ে ইরান থেকে সরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর আগে, রবিবার ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (IDF) মুখপাত্র এফি ডেফরিন জানিয়েছিলেন, ভারতীয় পড়ুয়াদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য ভারতকে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে। এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে দেখা হচ্ছে (Indian Students Return From Iran)।
তেহরানে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস সিরাজ ইউনিভার্সিটি অফ মেডিক্যাল সায়েন্স কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিল, যেন ভারতীয় পড়ুয়াদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়। ইরানের বিদেশ মন্ত্রক গত ১৫ জুন একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছিল যে, পড়ুয়াদের সুরক্ষিত স্থানান্তরের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আরও জানানো হয়েছিল, ১০ হাজার ভারতীয় নাগরিকের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য সীমান্ত খোলা হবে। ইরানের তরফে অনুমোদন পাওয়ার পরই ভারতীয় নাগরিকদের উদ্ধারের প্রস্তুতি শুরু করেছিল কেন্দ্র। অবশেষে সেই উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়েছে, এবং ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে।
সম্প্রতি ইজরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়ে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) বিবৃতি প্রকাশ করলেও, ভারত নিজেকে সেই বিবৃতি থেকে আলাদা রেখেছে। কারণ, ইরান ও ইজরায়েল—উভয়ই ভারতের গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু দেশ। এ পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লির তরফে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কূটনৈতিক আলোচনার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ভারত দুই পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে সংঘর্ষ থামানোর আহ্বান জানিয়েছে এবং উত্তেজনা কমাতে কূটনৈতিক আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছে। ইরান ভারতের এই পদক্ষেপকে স্বাভাবিক কূটনৈতিক উদ্যোগ হিসেবেই দেখছে। নয়াদিল্লির প্রস্তাব মেনে ভারতীয় নাগরিকদের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেহরান, যা সম্পর্কের ইতিবাচক দিককে তুলে ধরছে।
ইজরায়েলের লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এখনও পর্যন্ত ২২৪ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল রাতে তেহরান ইউনিভার্সিটি অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে বিদেশি পড়ুয়াদের জন্য তৈরি ছাত্রাবাসে হামলা হয়। এ ঘটনায় দুই কাশ্মীরি পড়ুয়া আহত হয়েছেন, যদিও তাঁদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল বলে খবর পাওয়া গেছে। এদিকে, দেশে ফিরতে শুরু করেছেন ভারতীয় নাগরিকরা, যা তাঁদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের পথে ইতিবাচক অগ্রগতি নির্দেশ করছে।