ডিজিটাল ডেস্ক, ২০ জুন : শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় আবারও দেখা গেল উত্তেজনার ছবি। স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি সংক্রান্ত বিল নিয়ে আলোচনার সূচনাতেই পারদ চড়ে রাজনৈতিক তাপমাত্রার। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ যখন বক্তব্য রাখতে ওঠেন, সেই সময় শাসকদলের একাধিক বিধায়ক প্রতিবাদ জানিয়ে হইচই শুরু করেন (Bidhan Sabha BJP Agitation)। বিজেপির তরফে অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে বারবার বাধা দিয়ে তাঁদের প্রতিনিধিদের বক্তৃতা থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় কার্যত অচল হয়ে পড়ে বিধানসভার কার্যক্রম।
তৃণমূল বিধায়কদের পাল্টা প্রতিক্রিয়া, “প্রতিদিন বিরোধীরা নিজেরাই বক্তব্য রেখে সভা ছেড়ে চলে যান। যখন আলোচনায় থাকতে তাঁরা আগ্রহী নন, তখন আবার কীভাবে বক্তব্য রাখার দাবি করেন!”
উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দুই পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, “আপনারা একদিকে বক্তব্য রাখেন, কিন্তু মাঝপথে সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান—এটা কোনও সংসদীয় রীতি নয়। এতে অন্য সদস্যরাও আহত হন।” তিনি আরও বলেন, “আমি চাই, আপনারা নিশ্চয়তা দিন যে বক্তৃতা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কক্ষে থাকবেন এবং সুস্থ আলোচনা বজায় রাখবেন।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে অধ্যক্ষ সংসদীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখার বার্তা দেন।
এই পরিস্থিতিতে শাসক দলের বিধায়করা ‘শুনছি না, শুনব না’ স্লোগান দিতে শুরু করেন, যার ফলে উত্তেজনা আরও বাড়ে। উল্লেখযোগ্যভাবে, অধিবেশনের শুরু থেকেই বিরোধীদের উপস্থিতি ও তাঁদের বক্তৃতার ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছে শাসকপক্ষ। সেই প্রেক্ষিতেই এদিন স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি বিলের আলোচনাও বিতণ্ডার আবহে ঢাকা পড়ে যায়।
অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের শান্ত থাকার আর্জিও শেষমেশ কাজে আসেনি। স্পোর্টস ইউনিভার্সিটি বিলের আলোচনার মাঝপথেই বিধানসভা কক্ষ ত্যাগ করেন বিজেপি বিধায়করা। তাঁদের অভিযোগ, শঙ্কর ঘোষকে বক্তব্য রাখতে দেওয়া হয়নি—তিনি বলার সময়েই শাসক দলের বিধায়করা লাগাতার স্লোগানে বাধা সৃষ্টি করেন। পরবর্তীতে, কক্ষে না ফিরে বিজেপি বিধায়করা বিধানসভার বারান্দায় মুখে কালো মাস্ক পরে ও হাতে পোস্টার নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানান। পোস্টারে লেখা ছিল, ‘চুপ! বিধানসভা চলছে।’ এই প্রতীকী প্রতিবাদের মাধ্যমেই বিধানসভায় গণতান্ত্রিক পরিসরের দাবি তুলে ধরেন তাঁরা।