ডিজিটাল ডেস্ক ২৪ জুন: উড়ো ফোন! ফোনে ভেসে আসছে বোমাতঙ্কের আভাস। তড়িঘড়ি ছুটছে বম্ব স্কোয়াড, স্নিফার ডগ। বিমানবন্দর থেকে জাদুঘর, সরকারি দফতর। এ ছবি নতুন নয়। এবার বম্ব স্কোয়াডকে আরও উন্নত করতে চাঙ্গা লালবাজার। কলকাতা পুলিশের বম্ব স্কোয়াডকে আধুনিকীকরণের উদ্দেশ্যে বিশেষ যন্ত্র আনা হচ্ছে।
এই যন্ত্রের নাম এক্সপ্লোসিভ ভেপার ডিটেকশন বা ইভিডি। অত্যাধুনিক এই যন্ত্র কিনতে চলেছে লালবাজার। এই যন্ত্রের মাধ্যমে জানা যাবে কী ধরণের বিস্ফোরক রয়েছে। কোনও জায়গায় বোমা প্লান্ট করা হলে তা থেকে গন্ধহীন একরকমের অদৃশ্য রাসায়নিক গ্যাস তৈরি হয়। সেই গ্যাস থেকে বোমা সহজেই চিহ্নিত করা যায়।
বিস্ফোরণ হলে কতটা কী ক্ষতি হতে পারে, এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে এই যন্ত্রের মাধ্যমে। সমস্ত তথ্য যন্ত্রের ডিজিটাল স্ক্রিনে ভেসে উঠবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিত্যাক্ত ব্যাগ বা অন্যান্য বস্তু রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এই সব ক্ষেত্রে বম্ব স্কোয়াড পৌছে দেখেছে তেমন কোনও বোমা ঘটনাস্থলে নেই। সে ক্ষেত্রে এই যন্ত্র থাকলে ২ মিটার দূর থেকে বোঝা যাবে যে আদৌ সেটি বোমা কিনা, বোমা হলে কী ধরণের বোমা বা যাবতীয় তথ্য। এই সব ক্ষেত্রে আগে থেকেই সচেতন হতে পারবে বম্ব স্কোয়াডের কর্মীরা। বোমা নিষ্ক্রিয় করার জন্য সেই মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে। প্রাথমিকভাবে ২টি যন্ত্র কেনা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। যার দাম আনুমানিক ৬০ লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যেই টেন্ডার ডাকা হয়েছে লালবাজারের তরফে। বিভিন্ন সংস্থার নমুনা দেখে তবেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে কেনা হবে এই যন্ত্র।
১ ন্যানোগ্রাম পর্যন্ত সূক্ষ্ম বিস্ফোরক চিহ্নিত করতে পারবে ইভিডি। ১ গ্রাম বিস্ফোরককে ১০০ কোটি ভাগে বিভক্ত করলে, প্রতি ভাগকে ১ ন্যানোগ্রাম বলা হয় অর্থাৎ সূক্ষ্মাতি সূক্ষ্ম রাসায়নিক বাষ্পকেও চিহ্নিত করতে পারবে ইভিডি। বাষ্প, কণা, তরল সহ যেকোনও অবস্থায় জৈব বা অজৈব বিস্ফোরক চিহ্নিত করতে পারবে ইভিডি। -১০ ডিগ্রি ঠান্ডা হোক বা ৫৫ ডিগ্রি পর্যন্ত গরম, স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারবে এই যন্ত্র। মাত্র ২ কেজি ওজনের এই যন্ত্র একজনই সামলাতে পারবেন। যন্ত্রের উপরে রয়েছে একটি ২ ইঞ্চির এলইডি ডিসপ্লে। সন্দেহজনক বস্তুর ২ মিটারের মধ্যে এই যন্ত্র নিয়ে গেলেই ডিসপ্লেতে দেখা যাবে বিস্ফোরকের নাম। যন্ত্রে থাকছে স্পিকারও।
ডিজিটাল স্ক্রিনে তথ্য দেখার পাশাপাশি বিস্ফোরকের নাম শোনাবে ইভিডি। ‘রিয়েল টাইম ডিটেকশন’ অ্যানালিসিস ধরা পড়বে স্ক্রিনেই। কী ধরণের বিস্ফোরক, কতটা রয়েছে, কী পরিস্থিতিতে রয়েছে, তা নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব কিনা- এরকম যাবতীয় তথ্য সবটাই জানিয়ে দেবে এই অত্যাধুনিক যন্ত্র। কলকাতা পুলিশের কাছে এই যন্ত্র প্রথম আসছে সুতরাং এটি ব্যবহারের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। যন্ত্র কেনার আগে ডেমো সেশন শুরু করবে লালবাজার।