ডিজিটাল ডেস্ক, ৩০ মে : অর্ধনগ্ন মহামিছিল কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আগেই ধর্মতলা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে চাকরিহারা শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডলকে (SSC Protest Update)। পুলিশ যখন তাঁকে প্রিজন ভ্যানে তুলছিল, তখন তিনি চিৎকার করে বলেন, “যোগ্যদের ধরুন, আর চোরেদের পুষে রাখুন!” হকের চাকরি ফেরতের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। এই ঘটনা আন্দোলনকারীদের মধ্যে আরও ক্ষোভ ও প্রতিবাদের জন্ম দিয়েছে।
প্রসঙ্গত চাকরিহারাদের ‘অর্ধনগ্ন’ প্রতিবাদ মিছিলে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা থাকায় শুরুতেই ধরপাকড় চালানো হয়। শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে একাধিক যোগ্য চাকরিহারাকে আটক করা হয়, যেখানে পুলিশের সঙ্গে বারবার বচসা বাঁধে। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্টেশন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, পুরো এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে (SSC Protest Update)।
আন্দোলনকারীরা পুলিশের ‘অতিসক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলেছেন, তাঁদের দাবি—পুলিশ বহু সাধারণ নিত্যযাত্রীকেও ভুলবশত আন্দোলনকারী মনে করে আটক করছে।
গত এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ প্যানেল বাতিল করা হয়, যার ফলে প্রায় ২৬ হাজার চাকরিপ্রার্থী এতে প্রভাবিত হন। রাজ্য সরকার নির্ধারিত নিয়ম মেনে নতুন করে তাঁদের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চলেছে। তবে, ‘যোগ্য’ প্রার্থীদের দাবি—তাঁরা একবার পরীক্ষায় সফল হয়েছেন, তাই পুনরায় পরীক্ষা দিতে রাজি নন। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ভিত্তিতে স্পষ্ট করেছেন যে আন্দোলনে লাভ নেই, চাকরি ফিরে পেতে হলে পরীক্ষা দিতেই হবে। এরই মধ্যে চাকরিহারা প্রার্থীরা তাঁদের দাবিতে অনড় থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-এর প্রতিনিধি চিন্ময় মণ্ডল শুক্রবারের মহামিছিলের ঘোষণা করেছিলেন। সেই অনুযায়ী, এদিন সকাল ১১টা থেকে শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে আন্দোলনকারীদের জমায়েত শুরু হয়। পরিকল্পনা ছিল সেখান থেকে নবান্ন অভিমুখে মিছিল শুরু করাতবে বিশৃঙ্খলার সম্ভাবনা থাকায় পুলিশ মিছিলের অনুমতি দেয়নি এবং শুরুর আগেই বাধা দেয়। শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর থেকে বেশ কয়েকজন চাকরিহারাকে আটক করে প্রিজন ভ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, এসএসসি শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়, যেখানে শিক্ষকতার পূর্ব অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর লিখিত পরীক্ষার ওএমআর শিট দু’বছর সংরক্ষণ করা হবে, তারপর সেগুলি নষ্ট করা হতে পারে। তবে, ওএমআর শিটের স্ক্যান করা কপি ১০ বছর পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকবে এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে, যাতে প্রার্থীরা ভবিষ্যতে প্রয়োজন অনুযায়ী তা দেখতে পারেন।