Child Torture : বর্বরতার একদিন পেরিয়ে গেলেও অধরা কারখানার মালিক ও নিখোঁজ শিশু শ্রমিকটিও!

10

ডিজিটাল ডেস্ক, ৪ জুনঃ মধ্যযুগীয় বর্বরতার দিনগুলি যে এখনও শেষ হয়নি তার নিদর্শন ফের একবার ইতিমধ্যেই সামনে উঠে এসেছিল গতকালই। ওই ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মোবাইল চুরির অপবাদ। তার জেরে জিনস ওয়াশের কারখানায় এক শিশু শ্রমিককে উল্টো করে ঝুলিয়ে মারধরের পর বিদ্যুতের শক দেওয়ার অভিযোগ উঠল মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে। এহেন নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে রবীন্দ্রনগর থানার সন্তোষপুরে। ঘটনার পর থেকে খোঁজ নেই নির্যাতনের শিকার ওই নাবালকের। পলাতক মালিকপক্ষও। শিশু শ্রমিকের পরিবারের আশঙ্কা, তাকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। ইতিমধ্যেই তাঁদের তরফে রবীন্দ্রনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে অপহরণ, মারধরসহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। ঘটনার বিষয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনও (Child Torture)।

জানা গিয়েছে, নাবালকের বাড়ি ইসলামপুরের মাটিকুণ্ড-১ পঞ্চায়েতে। তার পরিবার সূত্রে খবর, এলাকারই বাসিন্দা মহম্মদ শাহেনশা, ফিরোজ আলম ও ফারুক আলম। এই তিন ভাইয়ের সন্তোষপুরের পীরডাঙা এলাকার জিনসের প্যান্ট ওয়াশ করার কারখানা রয়েছে। সেখানে কাজ করার জন্য ২০২৪ ডিসেম্বর মাসে ওই নাবালককে নিয়ে যায় তারা। চুক্তি হয়েছিল মাসিক ৮ হাজার টাকায়। সেখানে ওই শিশু শ্রমিকের দাদাও কাজ করতেন। কিন্তু নাবালকের পরিবারের অভিযোগ, বেতনের টাকা দেয়নি মালিক। ছেলের খোঁজখবরও ছিল না। সোমবার এক পরিচিতের থেকে সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ক্লিপ দেখে আঁতকে ওঠেন তাঁরা। পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘ভিডিওয় দেখলাম, আমাদের ছেলেকে উল্টো করে ঝুলিয়ে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর চলছে। একজন পাশে দাঁড়িয়ে আবার ইলেকট্রিকের শক দিচ্ছে। আর পাশে দাঁড়িয়ে একজন বলছে, তুই মোবাইল চুরি করেছিস!’এরপরই নাবালকের পরিবার মঙ্গলবার রবীন্দ্রনগর থানায় এসে লিখিত অভিযোগ করে। তাঁদের অভিযোগ, বেতন চাওয়াতেই ওই নাবালককে চুরির অপবাদ দিয়ে ‘খুন’করেছে ।

অভিযোগ পেয়েই রবীন্দ্রনগর থানার আইসি তৎক্ষণাৎ একটি টিমকে ওই কারখানায় পাঠান। দেখা যায়, তালা বন্ধ। তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পুলিস অবশ্য কাউকে খুঁজে পায়নি। এমনকী নির্যাতনের শিকার ওই শিশু শ্রমিকের দেখাও মেলেনি। এরপরই পুলিস অপহরণ সহ একাধিক ধারায় কেস রুজু করে। পুলিস জেনেছে, এই ঘটনা গত শুক্রবারের। কারখানার ভিতরে শেডের ছাদে একটি কাঠের বিমের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে উল্টো করে ঝোলানো হয় নাবালককে। এরপর এক ব্যক্তি এক্সটেনশন কর্ড থেকে বিদ্যুতের শক দিতে শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দা এক যুবক জানিয়েছেন, ওই শিশু শ্রমিককে জখম অবস্থায় অন্যত্র নিয়ে যেতে দেখেছিলেন। কিন্তু ওই কিশোর এখন কোথায়, তা নিয়েই রহস্য।
কিশোরকে ইলেক্ট্রিক শক দেওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার ২, তবে খোঁজ নেই নির্যাতিত নাবালকের । মোস্তাফা কামাল ও তৌহিদ আলম নামে ওই ২ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে রবীন্দ্রনগর থানার পুলিশ। ধৃতরা ওই কারখানারই কর্মী বলে জানা গিয়েছে। তবে আক্রান্ত কিশোরের খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। খোঁজ পাওয়া যায়নি আক্রান্ত কিশোরের। কারখানার মালিক তথা মূল অভিযুক্ত শেহেনশাহ নামে যুবককেও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

কলকাতার অদূরে মহেশতলা পুরসভা এলাকায় এক কিশোরকে চুরির অভিযোগে উল্টো করে ঝুলিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বিদ্যুৎ শকও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা একটি জিনসের পোশাকের কারখানায় ঘটেছে। ইতিমধ্যেই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। আক্রান্ত কিশোরের পরিবার দোষীদের শাস্তির দাবি তুলেছে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোবাইল চুরির সন্দেহে ১৪ বছরের সামসাদ আলিকে নির্যাতন করা হয়। অভিযুক্তরা পলাতক, এবং পুলিশ তাদের খোঁজ চালাচ্ছে।

এই ঘটনার পর শিশু সুরক্ষা আইন অনুযায়ী কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। এলাকাবাসী দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার মহেশতলার একটি কারখানায় মোবাইল চুরির সন্দেহে ১৪ বছরের সামসাদ আলিকে উল্টো করে ঝুলিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, কারখানার মালিক শাহেনশাহ ও তার সহযোগীরা সামসাদকে বিদ্যুতের শকও দিয়েছেন। এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে আক্রান্ত কিশোরের পরিবার। পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তরা পলাতক এবং পুলিশ তাদের খোঁজ চালাচ্ছে। এই ঘটনায় শিশু সুরক্ষা আইন অনুযায়ী কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। এলাকাবাসী দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।