Iran Israel Explainer : চোখে ধুলো দিয়ে পরমাণু অস্ত্র বানাচ্ছিল ইরান? কোন বিপদের আঁচ পেয়ে হামলা চালাল ইজরায়েল?

14

ডিজিটাল ডেস্ক, ১৩ জুন : ইরান-আমেরিকার মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে চলা আলোচনা বেশ তীব্র হয়ে উঠেছিল। শোনা গিয়েছিল, তেহরান কিছুটা নমনীয় মনোভাব দেখিয়েছে ওয়াশিংটনের প্রতি এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তারা পরমাণু অস্ত্র তৈরি করবে না। তবে এর বিপরীতে শর্ত ছিল, ইরানকে ‘ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্ট’ প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়া যাবে না।

এখান থেকেই কি ইজরায়েলের উদ্বেগ বাড়তে শুরু করেছিল (Iran Israel Explainer)? সম্ভাব্য বিপদের আশঙ্কায় শুরু থেকেই নজর রাখছিল তারা গোটা পরিস্থিতির উপর? শেষ পর্যন্ত সেই আশঙ্কাকে সামনে রেখে কি ইসলামিক দেশটির পরমাণু কেন্দ্রে আঘাত হানল তেল আভিভ?

আজ শুক্রবার সকাল থেকে ইরানে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ শুরু করেছে ইজরায়েলি সেনাবাহিনী। সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারকে লক্ষ্য করে তারা আকাশপথে হামলা চালায়, যেখানে অন্তত ২০০টি মিসাইল আঘাত হানে। এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের সেনাপ্রধান মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি এবং ইরানের এমার্জেন্সি কমান্ডের প্রধান। তেল আভিভ জানিয়েছে, তেহরানের শক্তি দুর্বল করতে কয়েকদিন ধরে চলবে এই অভিযান। দীর্ঘদিন ধরেই ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। ২০২৩ সালে গাজা যুদ্ধের পর এই সংঘাত আরও তীব্র হয়। ইজরায়েল দাবি করেছে, হামাসকে অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে ইরান, যা নিয়ে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে দুই দেশের মধ্যে কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। যদিও পরে কিছুটা শান্তি ফিরে এলেও, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কখনোই পুরোপুরি প্রশমিত হয়নি।

বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর আশঙ্কা ছিল যে ইরান-আমেরিকা পরমাণু চুক্তি আলোচনার আড়ালে তেহরান গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে। আজকের হামলার বিষয়ে ইজরায়েলের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার একটি রিপোর্ট তাদের হাতে আসে, যেখানে দাবি করা হয় যে ইরান একদিকে পরমাণু গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে পরমাণু অস্ত্রও তৈরি করছে। ‘ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্ট’ ছাড়াও ইরান অত্যাধুনিক মিসাইল তৈরি করেছে, যা পরমাণু হামলার সক্ষমতা রাখে। ইজরায়েলের উদ্বেগ এখানেই—এই অস্ত্র বা মিসাইল হামাস, হাউথি বিদ্রোহীদের মতো সশস্ত্র সংগঠনের হাতে চলে যেতে পারে। এই সম্ভাব্য বিপদ ঠেকাতে ইজরায়েল তেহরানের পরমাণু পরিকাঠামোকে টার্গেট করে সামরিক অভিযান চালিয়েছে।

কয়েকদিন আগেই ইরানের ইসলামিক রেভেলিউশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) ‘মিসাইল সিটি’ প্রকাশ্যে আসে, যা তাদের তৃতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার। এই প্রকাশনা আরও বাড়িয়ে দেয় আমেরিকা ও ইজরায়েলের উদ্বেগ। ইতিমধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এই দুই দেশ রেভোলিউশনারি গার্ডসকে নজরে রেখেছে। ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রোন হামলায় ‘কাডস ফোর্স’-এর কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলেমানি নিহত হন। এই হামলার পিছনে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যক্ষ নির্দেশ ছিল বলে অভিযোগ ওঠে।